শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০২:৪০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
দল গোছাচ্ছে আওয়ামী লীগ

দল গোছাচ্ছে আওয়ামী লীগ

স্বদেশ ডেস্ক:

তৃণমূল ও কেন্দ্রকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তারই অংশ হিসেবে মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের সম্মেলন করার জন্য তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। সম্মেলনের তালিকায় রয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগ, তাঁতী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মৎস্যজীবী লীগ ও শ্রমিক লীগ। এ ছাড়াও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত নিরসন করে তৃণমূলকে গুছিয়ে এনে আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য একটি শক্তিশালী টিম গড়ে তুলতে চায় শাসক দল।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের তৃণমূল বেশ কয়েকটি ধারা-উপধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে দুইটি ধারা বেশ সক্রিয় থেকে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। প্রথমত. এমপি বলয়, দ্বিতীয়ত. দলীয় বলয়। দলীয় বলয়ের মধ্যেও আবার প্রভাবশালী নেতারা বিভিন্ন উপধারায় বিভক্ত রয়েছে। যার ফলে কিছু কিছু জেলা-উপজেলায় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট তুচ্ছবিষয়কে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন। তৃণমূলের এসব ধারা-উপধারাকে একত্র করে ঐক্যবদ্ধের কাতারে আনতে চাচ্ছে দলটি। আর এসবের কর্মতৎপরতার মূল লক্ষ্য হলো আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। যার কারণ হলো ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পেতে ৮০টির মতো নতুন রাজনৈতিক দল আবেদন করেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি দল নিবন্ধনও হয়তো পাবে। আবার আগের নিবন্ধনকৃত ৩৮টি রাজনৈতিক দলের সাথে নতুন নিবন্ধন পাওয়া রাজনৈতিক দলগুলো যুক্ত হলে নির্বাচনের কলেবর বাড়বে। নিবন্ধন না পাওয়া দলগুলো এবার বড় দল বা জোটের সাথে যুক্ত হয়ে নির্বাচনী তৎপরতা চালাবে। ফলে আগামী নির্বাচনের আগেভাগেই মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনসহ মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলার সম্মেলন সম্পন্ন করার তাগিদ রয়েছে। ওই সব সম্মেলন শেষ করার পরই আগামী ২৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটির নেতৃত্বে নতুন উদ্যোমে আগামী বছরের শুরু থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি ও তৎপরতা পুরোদমে শুরু করার চিন্তা রয়েছে দলটির।

দল গোছানো প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নয়া দিগন্তকে বলেন, আমাদের সামনে রয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও দলের সম্মেলন। আগামী ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে আমাদের দলের সম্মেলন। ইতোমধ্যে আমাদের সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় সম্মেলনের আগেই যথাসম্ভব মেয়াদোত্তীর্ণ আরো কিছু সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় নতুন কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে। তৃণমূলে যে সমস্যা রয়েছে আশা করি, সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। সম্মেলনের মাধ্যমে তৃণমূলকে আরো শক্তিশালী করা হবে। নির্বাচনী প্রস্তুতি প্রসঙ্গে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের জন্য সব সময় প্রস্তুত। আমরা আশা করছি, সব দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন একটি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৩ সালের শেষ দিকে অথবা ২০২৪ সালের প্রথম দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে এ বছরের ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে দলের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই তৃণমূলকে মজবুত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে চাচ্ছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। গেল ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত দলটির কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকেও তৃণমূলকে ঢেলে সাজিয়ে শক্তিশালী করা এবং জোরালোভাবে নির্বাচনী প্রস্তুতি নেয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রধান। নেতাদের মতে, নির্বাচনের আগেভাগেই অভ্যন্তরীণ বিরোধ মিটিয়ে তৃণমূলের চালিকাশক্তি যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের হাত দিয়ে একটি শক্তিশালী টিম চান দলীয় প্রধান। ওই টিম মূলত আগামী নির্বাচনে দলের পক্ষে জোরালোভাবে কাজ করবে এবং দলকে জিতিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এজন্য দুঃসময়ে যারা দলকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে তাদের মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় প্রধান। দলে কোনোভাবেই বিতর্কিতদের জায়গা দেয়া যাবে না। এ ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিতর্কিত এমপিদের মনোনয়ন থেকে বাদ দেয়ার চিন্তা রয়েছে। বিশেষ করে বয়সজনিত কারণে যারা অসুস্থ ও নিষ্ক্রিয় ওইসব দলীয় এমপিদের জায়গায় নতুনদের বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে নেত্রীর।

তৃণমূল ঢেলে সাজানোর ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য লে. কর্নেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে বৈশ্বিক মহামারী করোনায় আমরা কোনো সাংগঠনিক কাজ করতে পারিনি। আমাদের নেত্রী নতুন করে আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে এবং তৃণমূলকে শক্তিশালী করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সেই নির্দেশনার আলোকে কাজ শুরু করেছি। একই সাথে আগামী নির্বাচনের জন্যও প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877